মোস্তাক আহমেদ নিজস্ব প্রতিনিধি-
নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদের এক কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হল মিল্লাত হোসেন বাইজিদ ওরফে কামরুল (১৮) ও কাউসার (২৫) ।
বুধবার সকালে নরসিংদী জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মোঃ আল আমিন।
তিনি জানান, গত ৪ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টার সময় নিহত মোহাম্মদ আলী হোসেন নিজ বাড়ী রায়পুরা উপজেলার লোচনপুর হতে বের হয়ে রাতে আর বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। পরে গত ৫ ডিসেম্বর দুপুরে লোকমুখে জানতে পারেন আদিয়াবাদ ইউনিয়নের শেরপুর বিধিবাড়ী এলাকায় অজ্ঞাতনামা দুইজন লোকের মৃতদেহ কলাবাগানে পড়ে আছে।
পরে নিহতের ছেলে তার ফুপু মোসাঃ সালমা বেগমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার পিতার পরনের কাপড় এবং ক্ষত-বিক্ষত মৃত দেহ সনাক্ত করেন এবং অপর অজ্ঞাতনামা মৃত ব্যক্তির পিতা শিবপুর উপজেলার পাহাড় ফুলদী গ্রামের আ:মন্নাফের ছেলে মো:দ্বীন ইসলাম (৩৪) কে তার ছেলে সনাক্ত করেন।
উপরোক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নরসিংদী পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম (পিপিএম) এর দিক-নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবির) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার এর নেতৃত্বে একদল চৌকস টিমের উপ পরিদর্শক মোঃ মাহমুদুল হাসান, উপ পরিদর্শক আশরাফুল আলম, উপ পরিদর্শক মোঃ মাহমুদুল হাসান মারুফ, উপ পরিদর্শক কবির উদ্দিন, উপ পরিদর্শক সাদেকুর রহমান, উপপরিদর্শক নঈম মোস্তাক সহ সঙ্গীয় ফোর্সের সমন্বয়ে গঠিত ডিবির একাধিক দল মাঠে নামেন।
৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডে জড়িত রায়পুরা উপজেলার শেরপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়া এলাকার আসাদ মিয়ার পুত্র মিল্লাত হোসেন বাইজিদ ওরফে কামরুল (১৮) একই উপজেলা ও গ্রামের দুলাল মিয়ার পুত্র কাউসার (২৫) কে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তারা এও স্বীকার করেন যে ঘটনার সাথে আরও ৪ জন সহ তারা মোট ৬ জন অংশ নেন।
ডিবির ওসি প্রতিনিধিকে জানান যে, জোড়া খুন সংঘটিত হওয়ার পরপরই জেলা পুলিশ সুপার এর নির্দেশনায় তারা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেপ্তারের জন্য মাঠে নামেন। এসময় লাশের পাশে কিছু টাকা ও লাকিস্ট্রাইক সিগারেটের প্যাকেট পাশে পড়ে ছিল। পরিহিত সিগারেটের প্যাকেটের সূত্র ধরেই গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান শুরু করি। গ্রেপ্তারকৃত আসামী দুইজনের মধ্যে একজনের কাছে লাশের পাশে পড়ে থাকা লাকিস্ট্রাইক সিগারেটের প্যাকেট পাওয়া যায়। তাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করেন এবং বাকি পাঁচজনের নাম প্রকাশ করেন। সে আরোও জানায়, জুয়া খেলার টাকা-পয়সার লেনদেনের বিরোধের কারণে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানোমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও লাকিস্ট্রাইক সিগারেট প্যাকেটের ভিতর ৭টি সিগারেট উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আটককৃত আসামীদের আদালতে সোপর্দ করার প্রতিক্রিয়াধীন রয়েছে।
Design & Developed BY- KhanITHost.com
Leave a Reply